আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভোরের আলো সাহিত্য আসরের সার্বিক সহযোগিতায় আনতারা স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে স্মৃতিচারণসভা অনুষ্ঠিত।

রফিকুল হাবিব, স্টাফরিপোর্টার ঃ ভোরের আলো সাহিত্য আসরের সার্বিক সহযোগিতায় আনতারা স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে মরহুম আনতারার ওপর গতকাল ১০অক্টোবার,সোমবারদিন সন্ধা ৭ঘটিকায় এক আলোচনা ও দু’আ-মোনাজাত কর্মসূচি পালন করা হয়।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানাসংলগ্ন ভোরের আলো সাহিত্য আসর কার্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনের শিল্পী,সাহিত্যিক,ছড়াকার,সাংস্কৃতিককর্মী,যুবসংগঠক,নাট্যকার,কলামিষ্ট ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যকার আজিজুর রহমান। প্রথমেই তিনি সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন। অতঃপর আনতারা মোকাররমা স্মৃতি সংসদের সভাপতি মোঃ শাহীনুর ইসলাম ওরফে শাহীন মিয়াকে স্মৃতিচারণ সভাটি উপস্থাপন করার জন্য তিনি নির্দেশ প্রদান করেন।

স্মৃতিচারণ সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোরের আলো সাহিত্য আসরের প্রতিষ্ঠিতা মোঃ রেজাউল হাবিব রেজা।

বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভোরের আলো সাহিত্য আসরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কিশোরগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল হক সাদী।

পরপারের কথা স্মরিয়ে দিতে “এই কবরে যাইতে হবে” নামক গজল পেশ করেন এয়াতীম ছেলে মোঃ জনি মিয়া। জনি মিয়া কোরআনুল কারীম থেকেও তেলাওয়াত করেন।

অতঃপর ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মোঃ শফিকুল ইসলাম।

শিল্পী আনতারার ওপর কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট কবি সামিউল হক মোল্লার রচিত কবিতা আবৃতি করেন ভোরের আলো সাহিত্য আসরের উপদেষ্টা লায়ন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।

শিল্পী আনতারার জীবনতথ্যের নানাদিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট সংগঠক মোঃ জিয়াউর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্লেষণধর্মী আলোকপাত করে সাংবাদিক ও বিশিষ্ট যুব সংগঠক মোঃ আমিনুল হক সাদী আনতারার জীবনের পরিমন্ডল থেকে নানা উপলব্দি মন্থন করার বহু বিষয়াবলীর শিক্ষা রয়েছে বলে গঠনমূলক মন্তব্য ছুৃড়ে দেন।

মরহুমা আনতারার ওপর তার শালীনতাবোধ ও মার্জিত রুচিশীল চরিত্রের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন দন্তচিকিৎসক মোঃ হিরা মিয়া।

আনতারার স্মৃতিচারণ করে গানের শিক্ষক শিল্পী আবুল কালাম আজাদ বলেন ঃ আজ আনতারা বেঁচে থাকলে তার পরিপূর্ণতা আসতো। অপরিণত বয়সে চলে যাওয়ায় তার অনেক কিছুই অসমাপ্ত রয়ে গেছে। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

আলোচনায় অংশ নেন মির্জা মাহবুবা বেগ মৌসুমী। তিনি বলেন ঃ মৌসুমী ছিলেন আমার খুব কাছের মানুষ। তাই হৃদের টানেই তার উপলব্দিটা আমার জন্য খুবই মর্মান্তিক।

ভোরের আলো সাহিত্য আসরের সহকারী প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জহিরুল হাসান রুবেল বলেন ঃ সে খুবিই ভালো একজন মানুষ ছিলেন। তার স্মৃতি ভাস্বরে আমরা যখন হারিয়ে যাই তখন খুবই ব্যাথা অনুভব করি।

অনুষ্ঠানে যথাসময়ে ভোরের আলো সাহিত্য আসরের প্রধান সমন্বয়ক ডাঃ মোবারক হোসেন খান উপস্থিত হতে না পারলেও শেষ সময়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে হাজির হন এবং অনুষ্টানে নানাবিষয়ের খোঁজখবর নেন। অতঃপর দুটি খাতায় স্বাক্ষর প্রদান করেন।

প্রধান আলোচক হিসেবে ভোরের আলো সাহিত্য আসরের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল হাবিব রেজা বলেনঃ এ পৃথিবীতে কেউ ইতিহাস লিখেন আর কেহবা ইতিহাস সৃষ্টি করেন। আনতারা কিশোরগঞ্জের সেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী একজন তরুণী। আনতারা অপরিণত বয়সে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বলেই জাতীয় পত্রিকা দৈনিক সমকালে সাংবাদিক ও লেখক সাইফুল হক মোল্লা দুলু আনতারা বিষয়ে লেখার অবতারণা করতে পেরেছেন। আনতারা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বলেই লেখক ও সাংবাদিক সাইফুদ্দীন আহমেদ লেনিন তার বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় লিখতে পেরেছেন আনতারার বিয়োগান্ত ঘটনার কথা। আনতারা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বলেই দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিক ও লেখক তাফসিলুল আজিজ কলমের আঁচড়ে তুলে আনতে পেরেছেন আনতারা মোকাররমার মর্মব্যাথার সংক্ষিপ্ত কাহিনী। আনতারা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বলেই লেখক আমিনুল হক সাদীর কলমে ওঠে এসেছে আনতারার না জানা অগণিত তথ্য। এভাবে যদি আমি আনতারা বিষয়ে নিউজ প্রকাশ হওয়া বিষয়ে সারাদিন বলতে থাকি তবু মৃত্যুর পর মিডিয়ায় কাভারেজ হওয়ার তালিকা শেষ করা যাবেনা। আর অনলাইন ভার্সনে কত যে এসেছে তার হিসেব করা সম্ভব নয়। আমার মনে হয়না কিশোরগঞ্জের কোনো অনুজ শিল্পী আনতারা মতো এত এত মিডিয়ায় কাভারেজ দিতে।
আরো প্রসিদ্ধ শিল্পী কিশোরগঞ্জ থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করেছে কিন্তু অপরিণত শিল্পীর মতো এ চিরবিদায়ের খবর এমনভাহে প্রকাশ হয়নি। আনতারার জন্য লেখকদের এত বেশি লেখালেখির কারণ ছিল প্রত্যেক লেখকদের মনে তিনি ঠাঁই করে নিতে পেরেছিলেন। এটাই তাকে নিউজ কাভারেজের বিশালত্ব দিয়েছে। আনতারা সকলের মন জয় করেছেন। এটাই তার ইতিহাস। আর তাই তার লেখক অগনিত।

আনতারা স্মৃতিসংসদের সভাপতি শাহীনুর ইসলাম
একদিকে যেমন অনুষ্ঠানের নতুন সঞ্চালক অপর দিকে তেমনি আনতারার একজন অভিভাবকও ছিলেন। তাই অনুষ্টানে এ সঞ্চালকের হৃদয়ানুভুতি ছিল অনন্য সীমারেখায় এক ব্যাথাতুর পরিস্থিতি। কান্নাচাঁপা কন্ঠেও নতুন উপস্থাপক হিসেবে সঞ্চালনাটি প্রণবন্ত করতে অনেক চেষ্টা করেছে।

সবশেষে মরহুমা শিল্পীর স্মৃতিচারণে গানের দু’কলি টান দিয়ে আবেগের তপ্ততা ছড়িয়ে দেন সভাপতি আজিজুর রহমান। ঘটনাটি তাৎক্ষনিক দেখা ও উপলব্ধির জায়গা থেকে স্মৃতিচারণ করে আনতারা জীবনতথ্যের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষনা করেন এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category